Rong koro । joy goswami । রং করো। জয় গোস্বামী

কবি জয় গোস্বামী কবিতা রং করো সাতসকালে ডােবার পাশে কচুপাতায় রােদ বকল আমায়, ‘তুই যে কী নির্বোধ।' পুঁচকে একটা ঘাসের মাথায় শিশিরগুলোর ফোঁটা বলল, 'তুমি আস্ত মাথামোটা! শরৎকালের হাওয়া কাঁপা বাবলাগাছের ডাল বলল, 'তুমি মানুষ, নাকি কাঠ ? আমার ওপার দেখতে তােমার ইচ্ছে করছে না ? তুমি কেবল ঘর নিয়ে অ'র চাকরি দিয়ে কেনা ?" থালার মতাে সূর্য ধ'রে বল দিঘির জল: ‘ভয় কাটিয়ে চান করবি চলে!' গাছের মাথায় বাঁক নিল যেই সাতটি বকের সারি গাছ বলল, 'অমন কবি আমিও হতে পারি! ভারি গুমোর গোমড়া মুখে সারাটা দিন বসে যে ভাবছে, হুম লিখতে হবে! - আসলে অন্ধ সে!' চিড়িক করে ঘাড়ঘোরানো লেজঝোলানো ফিঙে: ঝিমুচ্ছে কি দুঃখনেশায় ? মন মরা অফিঙে? সে হইতেছে ভিতুর ডিম্ব, সে হইল ঘরকুনাে! হাওয়া বলল, মাঝেমধ্যে আমার কথা শুনো। উলটোপালটা ছুট লাগিয়ে দিগ-দিগন্তরে কীসের এত রাগ গাে তােমার, গুমরে থাকবে ঘরে?” হাওয়া আমার জানলা দিয়ে বেরিয়ে যেতেই চড়াই ঢুকে বলল, 'এসাে তােমায় প্রথম থেকে পড়াই।' কী পড়াবে কী শেখাবে ওরা ? শেকড় গাড়া, দৌড়ানাে আর ওড়া বলতে বলতে মাঠের উপর একঝাক মেঘ দাঁড়ায় এক পাড়াতে রােদ রাখে আর বৃষ্টি আর এক পাড়ায় কচুর পাতা, ছাইগাদা আর দিঘির পাশে ঘাস সব ছাপিয়ে তুলির টানে দাঁড়িয়ে ওঠে কাশ বৃষ্টি আবার কী বলতে কী বলবে এই ত্রাসে জানলা আধেক ভেজিয়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি পাশে সামান্য এই রেলের মাঠে সামান্য জলধারা তাতেই যেন রূপকথা হয় সামান্য এই পাড়া। পাড়ার শেষে শিবমনির, হুড-তােলা রিকশায় টোপর হাতে বরবৌটি গ্রামের দিকে যায় রিকশাওয়ালা বুড়োমতন, গামছা-ঢাকা মাথা বৌটি তাকে এগিয়ে দিচ্ছে নিজের রঙিন ছাতা বৃষ্টি তাতে রঙিন, তবে রং করাে মাঠটাই আমি এবার টেবিলে ফিরি, লেখায় বসে যাই। A Bangla Kobita in "Rong koro" by Joy Goswami